ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় - ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম? বিস্তারিত জেনে নিন?

আজকে আমরা জানবো যে শরীরের কোলেস্টরল বাড়ানোর জন্য ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় কখন হয়ে থাকে সারাদিনে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম কেমন হয়ে থাকে। যেটি জেনে আমরা ড্রাগন ফল খেতে পারবো। আসুন জানি?

ভূমিকাঃ

আমাদের শরীরের ভিটামিনের মাত্রা ও কোলেস্টরল বাড়ানোর জন্য আমরা হয়তো অনেক কিছু ফলমূল খেয়ে থাকি। যেটি খেলে আমাদের শরীরে শক্তি বাড়ে। এর মধ্য একটা প্রোটিন যুক্ত ফল হচ্ছে ড্রাগন ফল। যেটি খেলে আমাদের শরীরের ভিটামিনের মাত্রা বাড়ে ও শক্ত যোগায়।

ড্রাগন-ফল-খাওয়ার-সঠিক-সময়
ড্রাগন-ফল-খাওয়ার-সঠিক-সময়  

তাই আসুন জেনে রাখি যে, শরীর ফিট রাখার জন্য এই ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় কখন হয়ে থাকে সারাদিনে। তাহলে সময় মেনে এই ফল খেতে পারবো। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম কি ও কিভাবে খেতে হয়। নিম্নে বিস্তারিত.........?

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়ঃ

মানুষের শরীর সতেজ রাখতে ও রক্ত চলাচল বৃদ্ধতি করতে এই ড্রাগন ফল খুবই উপকারি। এই ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালে খালি পেটে বা বিকেলের হালকা নাশতার সাথে। সকালে খালি পেটে ড্রাগন ফল খেলে এর মধ্যে থাকা ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার সহজে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি ও হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি আমরা প্রতিদিন খেলে আমাদের পেট পরিষ্কার রাখবে ও এবং দিন শুরু করার জন্য শক্তি জোগাবে।

আরো পড়ুনঃ ঢ়েড়স খেলে আমাদের শরীরে কতটা ভিটামিন ও প্রোটিন পায় জেনে নিন?

পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যারা ক্যান্সারের রোগে ভুঁকছেন তাদের জন্য এই ড্রাগন ফল খাওয়া বেশ উপকারি হতে পারে। কেননা ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ভিটামিন সি উপাদান থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে ও ক্যান্সারের মতো রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে এই ড্রাগন ফল। 

এর পাশাপাশি মনে রাখবেন যে কখনো রাতে ঘুমানোর আগে ড্রাগন ফল খাবেন না। বিশেষ করে যাদের হজম সমস্যা আছে, কারণ এতে থাকা ফাইবার রাতে অ্যাসেডিটি তৈরি করতে পারে। ড্রাগন ফল খাওয়ার সবচেয়ে উপকারী উপায় হলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়া এবং তা সকালে কিংবা দুপুরের খাবারের কিছুক্ষণ পর খাওয়া।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়মঃ

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম হচ্ছে যে আপনি চাইলে এই ড্রাগন ফল খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে কেটে ভেতরের বাইরের আঁশ বের করে অংশ চামচ দিয়ে বা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে সরাসরি খাওয়া। এই ফলের বাইরের চামড়া শক্ত এবং কাঁটাযুক্ত হলেও ভেতরের অংশ নরম লাল মিষ্টি ও রসালো হয়, যা খাওয়া শরীরের জন্য উপকারি। আপনি চাইলে এই ড্রাগন ফল সালাদের মত খেতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ সিদ্ধ আলু খাওয়া কতটা উপকারী ডাক্তারের মতে বিস্তারিত জেনে নিন?

এ ছাড়া আপনি চাইলে ড্রাগন ফল খেতে পারেন সকালে খালি পেটে বা বিকেলের হালকা নাশতায়, তবে খালি পেটে খেলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও ভিটামিন C আরও ভালোভাবে শরীরে কাজ করে। এটি সরাসরি কাঁচা খাওয়া ছাড়াও ফল সালাদ, স্মুদি, জুস বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন যা শরীরের জন্য আরও উপকারী ও সুস্বাদু হয়। প্রতিদিন ১/২টি ড্রাগন ফল খেলে শরীরে জন্য খুবই ভাল।

ড্রাগন ফলের ক্ষতিকারক দিকঃ

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় সকালে কিংবা বিকালে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে এই ড্রাগন ফল অতিরিক্ত খেলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে। সাধারণভাবে ড্রাগন ফল খুবই নিরাপদ ও পুষ্টিকর একটি ফল। কিন্তু যাদের ফলজাতীয় খাবারে প্রতি অ্যালার্জি আছে, তাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার পর গায়ে চুলকানি, ফুসকুড়ি, মুখে ফোলা বা হালকা শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।

আরো পড়ুনঃ শরীর থেকে রোগ দূর করতে মিষ্টি কুমড়ার গুরুত্ব কতটা জেনে নিন?

ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, যা হজমে সহায়তা করলেও অতিরিক্ত খেলে ডায়রিয়া, পেট ব্যথা বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের লোকেদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফাইবার হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। এটি ফল প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি হয়, যদি কেউ অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন তাহলে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে। ফলে একটি শরীর রোগের ঘর হতে পারে।

ড্রাগন ফলের উপকারিতাঃ

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম আমরা জেনেছি। এবার আপনাদের জানাবো যে এই ড্রাগন ফল খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়। নিম্নে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো দেখে নিন?

  1. ড্রাগন ফল খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এতে থাকা ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
  2.  হজমে সহায়তা করে ও এতে থাকা ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
  3.  ড্রাগন ফল খেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন C ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে ও ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর করে তোলে।
  4. ড্রাগন ফল খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক করে  এতে থাকা কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত হওয়ায় পেট ভরা থাকে, অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
  5. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে পরিমিতভাবে খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকার।
  6.  ড্রাগন ফলে থাকা ফ্যাট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ও  হার্ট সুস্থ রাখে।
  7.  এই ফলে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড় হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত শক্তিশালী করে।
  8.  ভিটামিন দ্বারা যুক্ত ও খনিজ উপাদান চুল পড়া কমায় ও চুল মজবুত করে।
  9. ড্রাগন ফল প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে খেলে শরীর থাকে সুস্থ, সতেজ ও সক্রিয়তা লাভ করে।
  10. ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে ও শরীরে শক্তি যোগায়।

ড্রাগন ফল খেলে কি ওজন বাড়েঃ

ক্যালরি কম থাকে তাই আমরা এই ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালে কিংবা বিকালে। এখন প্রশ্ন হলো যে এই ড্রাগন ফল খেলে কি আমাদের শরীরের ওজন বাড়ে। তাহলে আপনাদেরকে জানিয়ে দি যে, ড্রাগন ফল খেলে আমাদের কোনো ধরনের ওজন বাড়ার ভয় থাকে না। কারণ এতে থাকা ভরপুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন, বিটা ক্যারোটিন, এক ধরনের লাইকোপেনের মতো কিছুটা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফাইবার, ও আয়রন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যেটি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি ও ওজন বাড়ার কোনো ধরনের ভয় থাকে না।

ড্রাগন-ফল-খেলে-কি-ওজন-বাড়ে

বরং এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ ও কমাতে সহায়ক। ড্রাগন ফল খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার চাহিদা মেটায়। সুতরাং, পরিমিত ও সঠিক সময়ে ড্রাগন ফল খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা নেই। বরং এটি শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখতে সাহায্য করে।

ড্রাগন ফল খেলে কি পায়খানা লাল হয়ঃ

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় আগে আমাদেরকে বেঁছে নিতে হবে। কারণ সব কিছু সব সময় খাওয়া যায় না। এই ফল খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালে কিংবা বিকালে। এ ছাড়া আপি চাইলোও দুপুরের খাবারের পরে ২-৩ ঘন্টা পরে এই ড্রাগন ফল খেতে পারেন। কিন্তু একটা জিনিস মনে রাখবেন যে এই ড্রাগন ফল কিন্তু দেখতে ভেতর বাইরে পুরোটা লাল হয়। আমরা কি করি সময় সময় ভুল করে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলি যার কারণে আমাদের মেরুন রক্তের মল লালচে রঙের মত দেখতে লাগে।

আরো পড়ুনঃ টমেটো কিভাবে খেতে হয় ও কখন খেতে হয় জেনে নিন?

বিটরুট কিংবা ড্রাগন ফল অতিরিক্ত খাওয়ায় সময় সময় মলের লাইনে রক্তেরপাতের সমস্যা দেখা  দিতে পারে। ডাক্তারের বলেছেন যে আমাদের পেটে যে অন্ত্র বা মল থাকে সেটি রক্তের সাথে মিশে থাকে। তাই আমরা যখন কোনো ধরনের রং বিরঙের খাবার খাই তখন সে খাবারটি আমাদের রক্তের সাথে মিশে গিয়ে পায়খানার লাইনে চলে যায়। ফলে আমাদের পায়খানা লালচে দেখায়। তাই যেকোনো খাবার প্রয়োজন অনুযায়ী খাবেন।

ড্রাগন ফল খেলে কি রক্ত বাড়েঃ

'হ্যাঁ' বিশেষজ্ঞদের মতে, ড্রাগন ফল খেলে কি রক্ত বাড়ে আমাদের শরীরের। ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় জেনে তা আমরা যদি খেতে শুরু করি তাহলে ডাক্তারের বলেছেন যে ১৪-১৫ দিন আমরা যদি এই ড্রাগন ফল সকালে খাওয়া শুরু করি তাহলে এর ভেতরে থাকা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেড়ে যাবে ও আমাদের শরীরে ভিটামিনের মাত্রা প্রচুর পরিমাণে বাড়িয়ে তুলবে।

আরো পড়ুনঃ স্ট্রবেরি খেলে কি হয় ও কতটা উপকার পায় আমাদের শরীর জেনে নিন?

ফলে আমাদের শরীরের আয়রন, খনিজ, ও বি কমপ্লেক্স লোহিত রক্তকণিকা সঙ্গগঠন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আমরা যদি এই ড্রাগন ফল খাওয়া শুরু করি তাহলে আমাদের শরীরের সাথে সাথে ত্বকেরও উজ্জ্বলতা বাড়বে। তাই ড্রাগন ফল খাওয়া শুরু করুন আজকে থেকে। 

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি জা পানি বুঝতে পেরেছেন শরীরের কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়ানোর জন্য ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় কখন হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম কি।

প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.................. www.stylishsm.com



( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )









এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url