মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন কমে - মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা? বিস্তারিত জেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে শরীরের ভিটামিনের জন্য এই মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন কমে আমাদের শরীরের। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা কি কি রয়েছে। যেটি খেলে আমাদের শরীরে ভিটামিন বাড়বে। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
আমরা জানি ও বিশেষজ্ঞরা বলে আসেছেন যে শাকসবজির মধ্য যে প্রোটিন ও ভিটামিন রয়েছে তা আর কোনো কিছুর মধ্য নেই। শাকসবজি খেলে আমাদের শরীরের প্রোটিনের মাত্রা বাড়ে। যাতে করে আমরা শর্করার পুরো শক্তি পেয়ে থাকি।
![]() |
মিষ্টি-কুমড়া-খেলে-কি-ওজন-কমে |
তাই আসুন জেনে রাখি যে মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন কমে আমাদের শরীরের নাকি ওজন বেড়ে যায়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা কি রয়েছে। নিম্নে বিস্তারিত.........।
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন কমেঃ
হ্যাঁ, মিষ্টি কুমড়া খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে শরীরের। মিষ্টি কুমড়াই লো-ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত সবজি, যা পেট ভরিয়ে রাখে এবং পেটে ফ্যাট জমতে দেয় না। ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ায় ক্যালোরি খুবই কম থাকে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। অথচ এতে থাকা ফাইবার দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
এ ছাড়া মিষ্টি কুমড়ায় থাকা ভিটামিন A, C, পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের চর্বি পোড়াতে সহায়ক। এটি শরীরকে ডিটক্সিফাই করে এবং পাচনতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে হেল্প করে। যেটি আমরা মেনে চললে আমাদের শরীরের ওজন আসতে আসতে কমতে শুরু করবে।
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতাঃ
মিষ্টি কুমড়া একটি পুষ্টিকর ও উপকারী সবজি, যা শরীরের নানা দিক থেকে উপকার করে থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A, C, E, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও ফাইবার, যা শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে। যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে ও ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সহায়ক।
মিষ্টি কুমড়া হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো, কারণ এতে কোলেস্টেরল কম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বেশি থাকে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। মিষ্টি কুমড়া খেলে পেটের পোচন ক্ষমতা বাড়ায়। যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও যেকোনো খাবার হজম করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মুষ্টি কুমড়া খুবই উপকারী, কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়া, মিষ্টি কুমড়া আমরা যদি খাই তাহলে আমাদের শরীরের ওজন কমাতে শুরু করে। কারণ এতে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকে। মিষ্টি কুমড়া খেলে শরীরকে ঠাণ্ডা-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নানা ভাইরাসজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে। তাই সপ্তাহে ২-৩ দিন অবশ্যই মুষ্টি কুমড়া খাবেন।
মিষ্টি কুমড়ার ক্ষতিকর দিকঃ
মিষ্টি কুমড়া সাধারণত নিরাপদ ও উপকারী একটি সবজি হলেও, অতিরিক্ত বা ভুলভাবে বেশি খাওয়ার ফলে কিছু ক্ষতিকর দিক দেখা দিতে পারে। এটি খেলে বেশিরভাগ মানুষ উপকার পেলেও, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে শরীরের। যেমন মিষ্টি কুমড়ায় থাকা বিটা-ক্যারোটিন যদি অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে জমে যায় তাহলে গায়ে হালকা হালকা রং পরিবর্তন দেখা যায় যাকে বলা হয় ক্যারোটিনেমিয়া।
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন কমে কিন্তু মিষ্টি কুমড়া অতিরিক্ত খেলে আমাদের পেট ফোলা, পেট ব্যাথা, কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ হতে পারে। আমরা মিষ্টি কুমড়া খাই আমাদের ওজন কমানোর জন্য। কিন্তু আমরা যদি ভুল করে অতিরিক্ত মিষ্টি কুমড়া খেয়ে ফেলি। তাহলে দেখা যাবে যে ওজন না কমে আরো বেড়ে গেছে। কেননা অতিরিক্ত কোনো জিনিস খাওয়া ভাল না। বেশী খেলে সব সময় মানুষের ক্ষতি হয়ে থাকে।
অনেক সময় দেখা যায় যে কুমড়া পুরনো হয়ে গেলে বা সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে এতে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস জন্মামে পেটের অসুস্থতা, ডায়রিয়া বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত খেলে এটি কিছু মানুষের মধ্যে অ্যাসিডিটির সমস্যা তৈরি করতে পারে।
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়েঃ
বিশেষজ্ঞরা বলেছেনে যে কোনো যদি ডায়াবেটিস রোগী হয়। তাহলে সে ব্যাক্তি মিষ্টি কুমড়া খেতে পারবেন না। কোনো রোগী যদি খেতে চায়। তাহলে সেই খাবারটি নির্ভর করবে তার শর্করার উপর। যে কতটুকু খাওয়া যাবে আর কতটুকু খাওয়া যাবে না। সাধারণভাবে মিষ্টি কুমড়া ডায়াবেটিস একধম বাড়ায় না। মিষ্টি কুমড়া সবজি হওয়ায় কারণে পরিমিতভাবে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সাময়িকভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে।
ডায়াবেটিক রোগীরা যদি মিষ্টি কুমড়া সিদ্ধ, ভাপে রান্না করে কম তেলে ভেউজে খাওয়ানো হয়। তাহলে সেটি শরীরের জন্য নিরাপদ ও উপকারী হতে পারে। এটি ফাইবার যুক্ত সমৃদ্ধ এবং ভিটামিন A, C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
মুষ্টি কুমড়া খেলে কি মোটা হয়ঃ
না, মিষ্টি কুমড়া খেলে সাধারণত মোটা হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। কারণ এটি একটি লো-ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত সবজি, যা শরীরকে পুষ্টি দিলেও অতিরিক্ত ক্যালোরি সরবরাহ করে না। ধরা যায় ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ায় মাত্র প্রায় ২০–২৫ ক্যালোরি থাকে, যা ওজন বাড়ানোর মতো নয়। বরং এটি খেলে পেট ভরে থাকে, ক্ষুধা কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
তবে অনেকেই মিষ্টি কুমড়া খুব বেশি প্ররিমাণে খেয়ে ফেলে। যার কারণে ওজন হ্রাস করে ফেলে। তখন আমাদের শরীরের ও পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন পেট ফাঁপা, পেট ফোলা, পেট ব্যাথা ইত্যাদি এই সব দেখা দিতে পারে। কিন্তু মিষ্টি কুমড়া ওজন কমানোর জন্য খাদ্যতালিকায় রাখা ভাল। তাই যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খাবেন।
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি এলার্জি হয়ঃ
ডাক্তারের বলেছেন যে মিষ্টি কুমড়া সাধারণত নিরাপদ একটি সবজি এবং অধিকাংশ মানুষের জন্য এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া টমেটোতে এলার্জির সমস্যা থাকতে পারে। এ ছাড়া আপনি যদি কুমড়ার বীজ খেতে থাকেন। তাহলে আপনার এলার্জির সমস্যা হতে পারে। জেননা কুমড়া থেকে কুমড়ার বীজ আলাদা হয়।
মুষ্টি কুমড়া খেয়ে আপনার যদি এলার্জি ভাব আসে তাহলে আপনার সাথে এই সব ঘটতে পারে। যেমনঃ চুলকানি, র্যাশ, গলা চুলকানো, মুখে ফোলা, পেট ব্যথা বা বমি বমি ভাব। কারও কারও ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের মতো গুরুতর প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
এ ছাড়া মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার পর শরীরে কোনো অস্বাভাবিক রোগ দেখা দেয়, তাহলে তা অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নাহলে পরিবর্তে এই রোগ আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই সব কিছু খাওয়া লিমিটেডের মধ্য রাখতে হবে।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন আমাদের শরীরের ভিটামিনের জন্য মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন কমে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা কি কি।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.................. www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url