পহেলা বৈশাখ কখন পালন করা হয় - পহেলা বৈশাখ খাবারের তালিকা? বিস্তারিত জেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে বাঙালিদের জন্য পহেলা বৈশাখ কখন পালন করা হয় ও কিভাবে পালন করা হয় এবং কেন পালন করা হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে পহেলা বৈশাখ খাবারের তালিকা কি কি হয়ে থাকে। যেটি বাঙালিরা বেশি পছন্দ করে থাকে। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
বাঙালি জাতির জন্য সবচেয়ে বড় একটা উৎসব হচ্ছে এই পহেলা বৈশাখ যাকে আমরা শুভ নববর্ষ বলে থাকি। এটি আমাদের বাঙালিদের জন্য খুবই একটা আনন্দের দিন। কেননা এই দিনে কোনো ধরনের জাতি ভেদাভেদ হয় না।
তাই আসুন জেনে রাখি যে, এই বাংলা নববর্ষ কিংবা পহেলা বৈশাখ কখন পালন করা হয় ও কিভাবে পালন করা হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে পহেলা বৈশাখ খাবারের তালিকা কি কি হয়ে থাকে। যেটি এই বাঙালি জাতি এতো আনন্দের সাথে মানিয়ে থাকে। নিম্নে বিস্তারিত.........?
পহেলা বৈশাখ কখন পালন করা হয়ঃ
পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন, অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। এটি প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল তারিখে পালন করা হয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে কখনো কখনো ইংরেজি বছরের তারিখ অনুযায়ী সামান্য পার্থক্য হয়ে যায়। এই দিনটি বাংলাদেশে জাতীয় সাংস্কৃতি উৎসব হিসেবে পালিত হয়। যা বাংলাদেশের মানুষ, পশ্চিমবঙ্গ, ও ত্রিপুরা লাইন এই উৎসব পালন করে থাকে।
বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আনন্দের প্রতীক হিসেবে সবাই নতুন পোশাক পরে, মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে সবাই এই দিনগুলোকে খুব আনন্দের সাথে কাটায়। পহেলা বৈশাখে মানুষ সবার আগে পান্তা-ইলিশ খায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানায়।
পহেলা বৈশাখ খাবারের তালিকাঃ
- পান্তা ভাতঃ
- ইলিশ মাছ ভাজা
- শুকনো মরিচ ও পেঁয়াজ
- আলু ভর্তা
- বেগুন ভর্তা
- ডাল
- অন্যান্য খাবারঃ
- এইদিনে ঘরে ঘরে মানুষ পান্তা ও ভাজা ইলিশ খেয়ে থাকে।
- খিচুড়ি
- চিংড়ি মাছের মালাইকারি
- ডিম ভাজা
- লাউ-চিংড়ি
- কচু শাক বা পুঁই শাক
- মিষ্টি ও ডেজার্টঃ
- রসগোল্লা
- পায়েস
- মিষ্টি দই
- সন্দেশ
- ছানার জিলাপি
- পানীয়ঃ
- আমের জুস
- ডাবের পানি
- বেলের শরবত
- লাচ্ছি
- দুধ-চিনি চা
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ২০টি বাক্য কি কিঃ
২. এই দিনটি বাঙালি জাতির সর্বজনীন উৎসব।
৩. পহেলা বৈশাখ প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল পালিত হয়।
৪. এদিন নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয় আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে।
৫. সকালে মানুষ নতুন পোশাক পরে উৎসবে অংশ নেয়।
৬. মেয়েরা সাধারণত সাদা-লাল শাড়ি পরে, আর ছেলেরা পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে।
৭. পান্তা ভাত ও ইলিশ মাছ পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্যবাহী খাবার।
৮. এদিন রাজধানীসহ সারাদেশে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
৯. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়।
১০. “এসো হে বৈশাখ” গানটি এদিনের প্রতীকী সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়।
১১. ব্যবসায়ীরা “হালখাতা” উৎসব পালন করে নতুন হিসাব শুরু করে।
১২. এই উৎসবে ছোট-বড়, ধনী-গরিব সবাই অংশ নেয় সমানভাবে।
১৩. পহেলা বৈশাখ বাঙালির ঐক্য ও সংস্কৃতির প্রতীক।
১৪. এই দিনে মানুষ একে অপরকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায়।
১৫. বাড়িতে ও অফিসে নানা ধরনের আয়োজন করা হয়।
১৬. শিশুদের জন্য মেলায় খেলনা, মিষ্টি ও মুখোশের আয়োজন থাকে।
১৭. অনেকে পরিবারের সঙ্গে পিকনিকে যায় বা বেড়াতে যায়।
১৮. পহেলা বৈশাখে ঘরে ঘরে মিষ্টান্ন তৈরি হয়।
১৯. দিনটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়।
২০. পহেলা বৈশাখ বাঙালির জীবনে আনন্দ, ঐতিহ্য ও নতুন আশার প্রতীক এই নববর্ষর দিন।
পহেলা বৈশাখ কারা পালন করেঃ
পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির অন্যতম প্রধান উৎসব, যা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালি মানুষ পালন করে। এই দিনটি মূলত বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিশ্বব্যাপী বাঙালিরা উদযাপন করে থাকেন। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান উভয় সব ধর্মের মানুষই পহেলা বৈশাখে সমান উৎসাহে অংশগ্রহণ করে পালন করে থাকেন।
এটি কোনো ধর্মীয় উৎসব নয় বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক ও জাতীয় উৎসব, যা বাঙালি পরিচয়ের প্রতীক। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সর্বত্র মানুষ নতুন পোশাক পরে, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। তাই বলা যায়, পহেলা বৈশাখ সব বাঙালির মিলন উৎসব, যেখানে সবাই নতুন বছরের আনন্দে একত্রিত হয় এইদিনটি পালন করেন।
পহেলা বৈশাখ এ কি কি হয়ঃ
পহেলা বৈশাখে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। সকাল থেকে মানুষ নতুন পোশাক পরে মেলা, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। ঘরে ঘরে পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, মিষ্টি ও বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার খাওয়া হয়। স্কুল-কলেজ, অফিস ও সংগঠনগুলোতে বিশেষ অনুষ্ঠান ও সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়। সবাই পুরনো দুঃখ, কষ্ট ভুলে নতুন আশা ও আনন্দে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। এই হচ্ছে বাংলা নববর্ষর প্রথম দিনের মজা।
পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনাঃ
পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন এবং এটি বাঙালি জাতির অন্যতম আনন্দময় উৎসব। প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়। এ দিনে মানুষ নতুন পোশাক পরে ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে, তারপর মেলা ও শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, মিষ্টি, দই ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী খাবার খাওয়া হয়।
গ্রাম থেকে শহর সব জায়গায় পহেলা বৈশাখে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়, লোকগীতি ও নাচে মেতে ওঠে সবাই। এই দিনটি আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। পহেলা বৈশাখ আমাদের শেখায় নতুনভাবে জীবন শুরু করতে এবং ঐক্য ও আনন্দে একসাথে থাকতে।
পহেলা বৈশাখে কোন মাছ খেতে হয়ঃ
পহেলা বৈশাখে ঐতিহ্যগতভাবে ইলিশ মাছ খেতে হয়। এটি বাংলা নববর্ষের অন্যতম প্রধান খাবার হিসেবে পরিচিত। সাধারণত ইলিশ মাছ পান্তা ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়, যা “পান্তা-ইলিশ” নামে বিখ্যাত। অনেকেই ইলিশ মাছ ভাজা, সর্ষে ইলিশ, দই ইলিশ বা ঝোল করে খেতে পছন্দ করেন।
ইলিশ মাছের পাশাপাশি কেউ কেউ রুই মাছ, কাতলা মাছ বা তেলাপিয়া মাছও রান্না করে থাকেন। তবে উৎসবের প্রতীক হিসেবে ইলিশই থাকে সবার প্রথম পছন্দের খাবার। এই দিনটি বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও স্বাদের মিলনে এক বিশেষ আনন্দের প্রতীক হয়ে ওঠে।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন বাঙালি জাতির জন্য পহেলা বৈশাখ কখন পালন করা হয় ও কিভাবে পালন করতে হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে পহেলা বৈশাখ খাবারের তালিকা কি।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন............... www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url