বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গার নাম - বাংলাদেশের ৭০টি সেরা দর্শনীয় বা পর্যটন স্থান? বিস্তারিত জেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে আমাদের এই ছোট একটা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গার নাম কি ও সেরা জায়গা কোনটা। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে বাংলাদেশের ৭০টি সেরা দর্শনীয় বা পর্যটন স্থান কি কি ও কোথায় রেয়েছে। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
আমাদের দেশ সোনার বাংলাদেশ। এই দেশে রয়েছে আমাদের সোনার মাটি ও সোনার ফসল। যেটি আমরা পেয়ে আমরা আমাদের সোনার বাংলার কাছে অনেক কৃ্তজ্ঞ। এই দেশে অনেক জায়গা আছে অনেক সুন্দর যেটি হয়না আমরা কখনো ঘুরে দেখি নাই কিন্তু আমাদের দেশে অনেক জায়গা আছে যেটি আমাদের ঘুরে দেখা উচিত।
তাই আসুন যেনে রাখি, আমাদের সামান্য এই বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গার নাম কি ও কোথায় রয়েছে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে বাংলাদেশের ৭০টি সেরা দর্শনীয় বা পর্যটন স্থান কোনগুলো ও কোথায় অবস্থিত আছে। নিম্নে বিস্তারিত.........?
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গার নামঃ
বাংলাদেশের অনেক সুন্দর জায়গা আছে কিন্তু সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। এটি দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা নীল সমুদ্র, সাদা বালু আর নারকেল গাছের সৌন্দর্যে ভরপুর একটি শহর। এখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য মন কেড়ে নেয় মানুষের। তবে শুধু সেন্ট মার্টিনই নয়, বাংলাদেশে আরও অনেক মনোমুগ্ধকর স্থান আছে যেমনঃ
সাজেক ভ্যালিঃ (রাঙামাটি) মেঘ, পাহাড় আর সূর্যের খেলার স্বর্গরাজ্য। এই প্রবলদ্বীপ পুরো পাহাড় জুড়ে রয়েছে। যেটির দৃশ্য দেখলে মনটা জুড়ে যায় প্রকৃতির জন্য।
কক্সবাজারঃ বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। যেখানে হাজারো মানুষের ভিড়ে ও সমুদ্রের দিকে তাকালে মনটা যেন সাড়া দিয়ে ওঠে।
সুন্দরবনঃ এটি বাংলাদেশের একটি ম্যানগ্রোভ জঙ্গল। যেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল ও প্রাকৃতিক বিস্ময়।
সিলেটের জাফলংঃ নদী, পাহাড় আর ঝর্ণায় ঘেরা এক স্বপ্নিল স্থান। যেখানকার ঝর্ণার পানি দেখলে মন ভরে ওঠে।
প্রতিটি জায়গার নিজস্ব সৌন্দর্য আছে, তবে শান্ত নীল জল আর প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য সেন্ট মার্টিনকে অনেকেই বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা বলে মনে করেন।
বাংলাদেশের ৭০টি সেরা দর্শনীয় বা পর্যটন স্থানঃ
আমাদের বাংলাদেশে এই রকম অনেক কিছু বৈচিত্যময় জিনিস ও জায়গা আছে যেটি পুরো ইতিহাসের কথা মনে করিয়ে দেয় ও সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে দেখার মতো। যেটি দেখলে একটি সাধারণ মানুষের মন জুরে যায়। নিচে এমন কিছু জায়গার নাম দেওয়া হলো যে প্রতিটি জায়গা নিজস্ব সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্বে ভরপুর।
- সমুদ্র ও দ্বীপ অঞ্চলঃ
- কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত
- সেন্ট মার্টিন দ্বীপ
- ইনানি সৈকত
- হিমছড়ি জলপ্রপাত
- মহেশখালী দ্বীপ
- কুতুবদিয়া দ্বীপ
- টেকনাফ সমুদ্র উপকূল
- পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত (চট্টগ্রাম)
- নাফ নদী
- মেরিন ড্রাইভ রোড
- পাহাড়ি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ স্থানঃ
- সাজেক ভ্যালি (রাঙামাটি)
- নীলগিরি (বান্দরবান)
- নাফাখুম ঝর্ণা (বান্দরবান)
- রেমাক্রি নদী
- বগালেক
- কেওক্রাডং
- থানচি
- আলুটিলা গুহা (খাগড়াছড়ি)
- রিসাং ঝর্ণা
- দেবতার পুকুর (খাগড়াছড়ি)
- বন, পাহাড় ও প্রকৃতিঃ
- সুন্দরবন (বিশ্ব ঐতিহ্য)
- রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট (সিলেট)
- লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান (মৌলভীবাজার)
- সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক
- মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত
- জাফলং (সিলেট)
- বিছানাকান্দি (সিলেট)
- লালাখাল (সিলেট)
- সাদা পাথর (ভোলাগঞ্জ)
- টাঙ্গুয়ার হাওর (সুনামগঞ্জ)
- ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানঃ
- মহাস্থানগড় (বগুড়া)
- পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার (নওগাঁ)
- ষাট গম্বুজ মসজিদ (বাগেরহাট)
- আহসান মঞ্জিল (ঢাকা)
- লালবাগ কেল্লা (ঢাকা)
- ময়মনসিংহের জাদুঘর
- রামসাগর দীঘি (দিনাজপুর)
- ময়নামতি প্রত্ন এলাকা (কুমিল্লা)
- ভাওয়াল রাজবাড়ি (গাজীপুর)
- পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রঃ
- বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক (গাজীপুর)
- জাতীয় চিড়িয়াখানা (মিরপুর, ঢাকা)
- ফ্যান্টাসি কিংডম (সাভার)
- ড্রিম হলিডে পার্ক (নারায়ণগঞ্জ)
- ওয়ান্ডারল্যান্ড (ঢাকা)
- নন্দন পার্ক (ঢাকা)
- চন্দ্রিমা উদ্যান
- হাতিরঝিল (ঢাকা)
- ধানমন্ডি লেক
- রমনা পার্ক
- ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থানঃ
- তারাগঞ্জ মাজার (রংপুর)
- বাইতুল মোকাররম মসজিদ (ঢাকা)
- সাতগম্বুজ মসজিদ
- শাহী জামে মসজিদ (রাজশাহী)
- হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার (সিলেট)
- হজরত শাহ পরান (রহ.) মাজার (সিলেট)
- কুষ্টিয়ার লালন শাহ মাজার
- কান্তনগর মন্দির (দিনাজপুর)
- পুতিয়া রাজবাড়ি (রাজশাহী)
- শ্রী শ্রী চণ্ডীমণ্ডপ (মাদারীপুর)
- হাওর, নদী ও প্রাকৃতিক জলাশয়ঃ
- মেঘনা নদী
- যমুনা নদী
- পদ্মা নদী
- কর্ণফুলি নদী
- কাপ্তাই লেক
- টাঙ্গুয়া হাওর (সুনামগঞ্জ)
- হাকালুকি হাওর
- কুশিয়ারা নদী
- সারিগাত নদী (সিলেট)
- চা-বাগান অঞ্চল (শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার)
এই ৭০টি জায়গা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য প্রতিটি স্থানই একেকটি নতুন অভিজ্ঞতা ও আনন্দের উৎস মানুষের কাছে।
বাংলাদেশের ভ্রমণের জায়গাঃ
বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দেশ, যেখানে ভ্রমণের অসংখ্য মনোমুগ্ধকর স্থান রয়েছে। এখানে পাহাড়, সমুদ্র, নদী, বন আর ঐতিহাসিক নিদর্শনের অপূর্ব মেলবন্ধন দেখা যায়। দেশের দক্ষিণে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার, আর এর পাশে নীল জলরাশি ও নারকেল গাছে ঘেরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, যা ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় গন্তব্য। উত্তরে সাজেক ভ্যালি, নীলগিরি, আর বগালেক পাহাড়প্রেমীদের জন্য স্বর্গতুল্য।
অন্যদিকে, সুন্দরবন তার রয়েল বেঙ্গল টাইগার আর বিশাল ম্যানগ্রোভ বন নিয়ে দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক বিস্ময়। সিলেটের জাফলং, বিছানাকান্দি ও রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট ভ্রমণকারীদের স্বপ্নপুরী। এছাড়া লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়সহ ঐতিহাসিক স্থানগুলো বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী। প্রকৃতি ও ঐতিহ্য ভালোবাসেন যেই হোন না কেন, বাংলাদেশে ভ্রমণের অসংখ্য জায়গা আছে যা মন ভরিয়ে দেবে শান্তি ও রোমাঞ্চে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোথায়ঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হিসেবে অনেকেই সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে মনে করা হয়। এটি দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা নীল সমুদ্র, সাদা বালুর সৈকত আর দিগন্তজোড়া নারকেল গাছে ভরপুর এক স্বপ্নিল স্থান। সকালবেলার সূর্যোদয় আর বিকেলের সূর্যাস্তের দৃশ্য এখানে একবার দেখলে ভুলে যাওয়া যায় না। দ্বীপের চারপাশে নীলচে সবুজ পানি আর শান্ত পরিবেশ পর্যটকদের মন ভরিয়ে দেয়।
তবে শুধু সেন্ট মার্টিনই নয়, সাজেক ভ্যালি, নীলগিরি, সুন্দরবন, কক্সবাজার, জাফলং, বিছানাকান্দি, গ্রামান্য এলাকা, এই রকম প্রতিটি জায়গাই নিজস্ব সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশ। কিন্তু যারা প্রকৃতির নীরবতা আর সমুদ্রের শান্ত ঢেউ ভালোবাসেন। তাদের কাছে সেন্ট মার্টিনই বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা বলে মনে হয়।
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থান গুলো কি কিঃ
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেশের গৌরবময় অতীত, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি বহন করে। নিচে বাংলাদেশের কিছু উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থানের নাম দেওয়া হলোঃ
- লালবাগ কেল্লাঃ ঢাকায় অবস্থিত মোগল আমলের ঐতিহাসিক দুর্গ।
- ষাট গম্বুজ মসজিদঃ বাগেরহাটে অবস্থিত, ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্য।
- পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারঃ নওগাঁ জেলার প্রাচীন সোমপুর মহাবিহার, এটি এক সময়ের বিখ্যাত শিক্ষাকেন্দ্র ছিল।
- মহাস্থানগড়ঃ বগুড়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন নগরী হিসেবে পরিচিত।
- আহসান মঞ্জিলঃ ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত নবাব পরিবারের প্রাসাদ, বর্তমানে এটি জাদুঘর।
- কান্তজীউ মন্দিরঃ দিনাজপুরে অবস্থিত টেরাকোটার দৃষ্টিনন্দন হিন্দু মন্দির।
- ময়নামতি প্রত্ন এলাকাঃ কুমিল্লায় অবস্থিত প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন।
- পানাম নগরঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক বণিক শহর।
- বায়তুল মোকাররম মসজিদঃ ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত জাতীয় মসজিদ।
- রামসাগর দীঘিঃ দিনাজপুরে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার।
- পুতিয়া রাজবাড়িঃ রাজশাহীর ঐতিহাসিক রাজপ্রাসাদ ও স্থাপত্য নিদর্শন।
- ভাওয়াল রাজবাড়িঃ গাজীপুরে অবস্থিত ঐতিহাসিক জমিদার প্রাসাদ।
- শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.) মাজারঃ সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান।
- তারাগঞ্জ মাজারঃ রংপুরের একটি বিখ্যাত ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থান।
- সাত গম্বুজ মসজিদঃ ঢাকার প্রাচীন মোগল স্থাপত্যের নিদর্শন।
এই স্থানগুলো শুধু পর্যটনের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য জানতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সব জায়গাতে প্রত্যেক মানুষকে যাওয়া উচিত।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা কোনটিঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা বলতে গেলে অনেকের কাছেই উত্তর ভিন্ন হতে পারে, তবে বেশিরভাগ মানুষ বান্দরবান জেলাকেই সবচেয়ে সুন্দর বলে মনে করেন। কারণ এখানে পাহাড়, ঝর্ণা, নদী আর মেঘের অসাধারণ মেলবন্ধন দেখা যায়।
বান্দরবানের নীলগিরি, সাজেক ভ্যালি, বগালেক, নাফাখুম ঝর্ণা, থানচি আর রুমা জায়গাগুলো প্রকৃতিপ্রেমীদের স্বপ্নের গন্তব্য। সকালবেলায় পাহাড়ের কোল ঘেঁষে ভেসে বেড়ানো মেঘ আর সবুজের ছোঁয়ায় বান্দরবান সত্যিই এক অপার সৌন্দর্যের রাজ্য।
তবে অনেকে সিলেটকেও সবচেয়ে সুন্দর জেলা মনে করেন, কারণ সেখানে আছে চা-বাগান, নদী, ঝর্ণা আর সবুজে মোড়া প্রকৃতি। জাফলং, বিছানাকান্দি, লালাখাল, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। এ ছাড়া রাজশাহীকে ধরা হয় পরিষ্কার ও পরিছন্নতার দিক দিয়ে। রাজশাহী হচ্ছে "সবুজ নগরী" যেটি বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের কাছে হাইলাইট একটি শহর।
বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী জেলা কোনটিঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী জেলা হচ্ছে নোয়াখালী শহর। এই শহরে দারিদ্রতা খুবই কম পরিমাণে আছে। এই নোয়াখালী শহর ২০২২ সাল অনুযায়ী এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে এই শহরের দারিদ্রের হার মাত্র ৬.১ শতাংশ। তাই বাংলাদেশের দুবাই কিংবা ধনী শহর বলতে নোয়াখালীকে বোঝায়। জাতীয় অর্থনীতিতে নোয়াখালীবাসীর উল্লেখযোগ্য অবদান অনস্বীকার্য।
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url