করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা - করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম? বিস্তারিত জেনে নিন?

আজকে আমরা জানবো যে মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে এই করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা কি কি হয়ে থাকে আমাদের শরীরের জন্য। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে এই মুখরোচ করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম কি। আসুন জানি? 

ভূমিকাঃ

আমরা সবাই আমাদের শরীর সঠিক রাখার জন্য কিছু না কিছু ফলমূল খেয়ে থাকি। যাতে করে আমাদের শরীর সতেজ থাকে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে করমচা খেলে আমাদের শরীরের কতটা উপকার হয় ও কতটা ভিটামিন পায়?

করমচা-ফল-খাওয়ার-উপকারিতা
করমচা-ফল-খাওয়ার-উপকারিতা   

তাই আসুন জেনে রাখি যে, শরীরের মিনারিল,ভিটামিন বাড়ানোর জন্য করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি? সেটি আমাদেরকে জানতে হবে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম কি রকম হয়। নিম্নে বিস্তারিত............।

করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতাঃ

ভিটামিন সি দ্বারা যুক্ত এই করমচা ফল আমাদের খাবারের মান বাড়ায় ও মুখে রুচিভাব আনে। করমচা ফল খেলে আমাদের শরীর থেকে সর্দি, কাশি, দাঁতের মাড়ি ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। করমচা, এক প্রকার টক-মিষ্টি স্বাদের ফল যা আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চল থেকে এখন শহরে চাষাবাদ করা হয়।

বিশষজ্ঞরা বলেছেন যে করমচার বৈজ্ঞানিক নাম Carissa carandas। এটি অ্যাপোসিনেসি (Apocynaceae) নামক একটি জাতীয় উদ্ভিদ। যা শরীরের বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে আমাদেরকে সুরক্ষা করে থাকে। তাই মাঝে মাঝে সকল মানুষকে এই করমচা খাওয়া উচিত।

করমচা ফল খাওয়ার নিয়মঃ

করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা হলো এটি খেলে আমাদের মুখরোচ আসে খাবারের প্রতি। কিন্তু এই করমচা খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে সেটি মানতে হবে। করমচা একটি পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণসম্পন্ন টক-মিষ্টি স্বাদের ফল, যা সঠিক নিয়মে খেলে শরীরের জন্য খুবই উপকারী এতে রয়েছে ভিটামিন 'সি'। করমচা ফল কাঁচা, সিদ্ধ বা রান্না করে খাওয়া যায়। অনেকেই এটি আচার, জুস, চাটনি কিংবা ভর্তা হিসেবে খেয়ে থাকেন।।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে করমচা রান্না করে খাওয়াই ভালো। আমরা যদি প্রতিদিন ৪-৫টি করমচা খেয়ে থাকি। তাহলে আমাদের শরীর থেকে আমাশয়, ডায়রিয়া, নামক রোগ থেকে খুব সহজে মুক্তি পেতে পারি। করমচা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও ভিটামিন সি তৈরি করতে সাহায্য করে।

গর্ভবস্থায় করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতাঃ

করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে কিন্তু প্রশ্ন হলো যে অনেকেই বুঝতে পারে না যে গর্ভবস্থায় কি এই করমচা ফল খাবে কি'না। তাই তথ্য অনুযায়ী জেনে নিন? গর্ভাবস্থায় করমচা ফল খাওয়া কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণে উপকারী হতে পারে প্রেসেন্টের জন্য। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা মা ও গর্ভস্থ শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। করমচা ফল খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি ভাল থাকে ও শরীরের হাঁড় মজবুত করে।

ভিটামিন সি গর্ভবতী মায়েদের রক্তশূন্যতা রোধ করতে সাহায্য করে এবং শরীরে আয়রন যোগাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। করমচা ফল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় সাধারণ সমস্যা একটি সমস্যার কারণে দেখা যায়। তাই গর্ভবস্থায় আপনি চাইলে করমচা খেতে পারবেন কিন্তু তার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন।

করমচা ফল খাওয়ার ক্ষতিকারক দিকঃ

করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা আমরা প্রায় সজক মানুষই জানি? এখন প্রশ্ন হলো যে এই করমচা ফল খেলে কি আমাদের কোন ধরনের ক্ষতিরত সিকার হতে হয় কি'না? এই করমচা ফলের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন আবার ক্ষতিও রয়েছে। তাহলে আসুন জেনে নি যে করমচা ফলে কি কি ক্ষতি হতে পারে আমাদের শরীরের?

  1. করমচা একটি টক জাতীয় ফল হওয়ায় বেশি খেলে গ্যাস্ট্রেকের সমস্যা হতে পারে আমাদের পেটে।
  2.  অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস, ফাঁপা কিংবা ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  3. করমচা ফলে থাকা প্রাকৃতিক অ্যাসিড দাঁতের এনামেল ও মাড়ি ক্ষয় করতে পারে।
  4. করমচা ফলে বেশি লবণ মিশিয়ে আচার হিসেবে খেলে তা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি সৃষ্টি করে পারে।
  5.  অতিরিক্ত খাওয়া গর্ভাবস্থায় অ্যাসিডিটি বা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে যা মা ও ছেলের ক্ষতির দিক হতে পারে।
  6. করমচা ফল টক এবং এটি বেশি খেলে পেট ব্যথা বা বমি হতে পারে।
  7. করমচা ফল বেশী পরিমাণে খেলে আমাদের মুখে ব্রণ হওয়ার সম্ভবনা থাকে
  8. কারও কারও শরীরে করমচা খাওয়ার পর অ্যালার্জি বা চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  9.  করমচার আচার বা জুসে অতিরিক্ত চিনি থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  10. করমচায় কিছু খনিজ উপাদান থাকে যা কিডনি সমস্যা থাকলে সমস্যা বাড়াতে পারে।
  11. খালি পেটে করমচা খেলে পেটে অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হতে পারে। যা সরাসরি আমাদের লিভারের ক্ষতি করতে পারে।

করমচা ফল পুষ্টি গুন কি কিঃ

করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা ও এর পুষ্টিগুণ নিয়ে নানন মানুষের মনে প্রশ্ন থেকে যায় যে এই করমচা ফল খেলে আজও কি কোনো পুষ্টি পাই আমাদের শরীর? তাই আজকে পুরো কাহিনী ভালোভাবে জেনে নিন? 

করমচা ছোট আকৃতির একটি টক-মিষ্টি স্বাদের ফল, যার মধ্যে রয়েছে নানা পুষ্টিকর উপাদান। নিচে করমচা ফলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণগুলো তুলে ধরা হলো?

১. ভিটামিন সি – ৩৮ মিলিগ্রাম রিবোফ্লেভিন যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক উজ্জ্বল রাখে এবং আয়রন শোষণে সহায়ক।

২. আয়রন (লোহা) – ১.৩ মিলিগ্রাম রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

করমচা-ফল-পুষ্টি-গুন-কি-কি

৩. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট – ১৪ গ্রাম প্রোটিন- ০.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট শরীরের কোষকে ক্ষতিকর র‍্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে।

৪. ক্যালসিয়াম – হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।

৫. ফসফরাস – শরীরের শক্তি উৎপাদনে এবং হাড় গঠনে সহায়ক।

৬. ভিটামিন এ – দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

৭. ডায়েটারি ফাইবার (আঁশ) – হজমে সহায়ক, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

৮. পটাশিয়াম – ২৬০ মিলিগ্রাম কপার- ০.২ যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হার্টের জন্য উপকারী।

৯. ম্যাগনেসিয়াম – ১৬ মিলিগ্রাম পেশি ও স্নায়ু কার্যক্রমে সাহায্য করে।

১০. কম ক্যালরি – ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।

এই পুষ্টিগুণের কারণে করমচা ফল নিয়মিত ও পরিমিতভাবে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।

করমচা খেলে কি ওজন কি বাড়েঃ

আমরা জানি যে করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক ভরপুর মাত্রায় রয়েছে আমাদের জীবনে। কিন্তু এই ফল খেলে কি আমাদের শরীরের ওজন বাড়ে না কমে সেটি নিয়ে কারো না কারো মনে অবশ্যই প্রশ্ন জেগেছে। তাহলে আমার এই ব্লগ পড়ে ক্লিয়ার হয়ে যায়।

 করমচা ফল আমরা মুখের স্বাদ বাড়ানোর জন্য খেয়ে থাকি। আর এই করমচা ফল খেলে শরীরের ওজন বাড়ে না। বরং এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। করমচা একটি কম ক্যালরিযুক্ত ফল, যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর আঁশ (ফাইবার) এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই ফল খেলে পেট সব সময় ভরে থাকে। ও ক্ষুধা কমায় এবং হজম প্রক্রিয়া ভালো করে যা ওজন কমাতে সহায়তা করে।

তবে সাবধান থাকতে হবে, যখন করমচা দিয়ে তৈরি আচার, জুস বা চাটনি অতিরিক্ত চিনি, লবণ বা তেল দিয়ে বানানো হয়। এসব ক্ষেত্রে ক্যালোরি বেড়ে যায় এবং নিয়মিত বেশি পরিমাণে খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এই ধরনের খাবার খাওয়া যাবে না।

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা কি কি। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম?

প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করেবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইল ভিজিট করুন.................. www.stylishsm.com



( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )







































এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url